মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট: ৩ (জেসন কামিংস, দিমিত্রি পেত্রাতোস, মনবীর সিং) পঞ্জাব এফসি (লুকা মায়সেন)
কলকাতা: আইএসএল-এ জয়যাত্রা শুরু হল মোহনবাগান সুপার জায়েন্টের। প্রথম ম্যাচে গত বারের চ্যাম্পিয়ন মুখোমুখি হয়েছিল গত বারের আই লিগ চ্যাম্পিয়ন পঞ্জাব এফসির। দুই চ্যাম্পিয়নের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি হাসল সবুজ-মেরুন বাহিনী। শনিবার সল্ট লেকের বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আয়োজিত ম্যাচে তারা ৩-১ গোলে হারাল পঞ্জাবকে। এটাই ছিল পঞ্জাবের প্রথম আইএসএল।
এ দিন মোহনবাগানের হয়ে গোল করেন জেসন কামিংস, দিমিত্রি পেত্রাতোস ও মনবীর সিং। পঞ্জাবের একমাত্র গোলটি করেন স্লোভেনিয়ার ফুটবলার লুকা মায়সেন। খেলার ধারা অনুযায়ী মোহনবাগানের আরও বেশি গোলে জেতা উচিত ছিল।
প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে বাগান
ম্যাচের শুরুতে খুয়ান ফেরান্দোর ছেলেরা কিছুটা নিজেদের অর্ধেই খেলতে থাকেন। সেই সুযোগে পঞ্জাবের প্লেয়াররা মোহনবাগানকে চেপে ধরার চেষ্টা করেন। তবে কাজের কাজ কিছু হয়নি। ইতিমধ্যে ৫ মিনিটের মাথায় মোহনবাগানের কোলাসো বাঁ দিকের টাচলাইনের ধারে দাঁড়ানো দিমিত্রি পেত্রাতোসকে উঁচু লব করে বল দেন। অসামান্য দক্ষতায় সেই বলের দখল নেন পেত্রাতোস। কিন্তু রেফারি অফসাইডের বাঁশি বাজিয়ে দেন।
ম্যাচের ১০ মিনিটে আবার আক্রমণে উঠে আসে সবুজ-মেরুন। এবং তা থেকে ফলও পেয়ে যায়। ডান প্রান্তে গ্লেন মার্টিন্সের কাছ থেকে বল পেয়ে আশিস রাই পঞ্জাবের বক্সে থাকা সাহাল আব্দুল সামাদকে ক্রস বাড়ান। সামাদ আলতো টাচ করে বল পাঠিয়ে দেন জেসন কামিংসের কাছে। বাঁ পায়ের শটে পঞ্জাবের জালে বল জড়াতে কোনো ভুল করেননি কামিংস। মোহনবাগান এগিয়ে যায় ১-০ গোলে।
মোহনবাগান দুই প্রান্ত দিয়েই বার বার আক্রমণে এসে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়ছিল। কিন্তু গোল পাচ্ছিল না তারা। মাঝেমাঝে পঞ্জাবও প্রতি-আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করছিল। বেশ কয়েক বার চেষ্টার পর ৩৫ মিনিটের মাথায় ব্যবধান বাড়ায় বাগান। কামিংস অসামান্য দক্ষতায় বল বাড়ান লিস্টন কোলাসোকে। কোলাসো বক্সে ঢুকে সামনে পেয়ে যান প্রতিপক্ষের গোলকিপার চেমইয়ংকে। কোলাসোর অ্যাঙ্গেলটা চেমইয়ং ছোটো করে আনার চেষ্টা করলে কোলাসো নিজে শট না নিয়ে বল বাড়িয়ে দেন পেত্রাতোসকে। বাঁ পায়ের শটে গোল করেন পেত্রাতোস।
এর কয়েক মিনিট পরেই তৃতীয় গোল করার সুযোগ পান লিস্টন। তাঁর ডান পায়ের শট দুর্দান্ত ভাবে বাঁচিয়ে দেন পঞ্জাবের গোলকিপার। প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে থাকে সবুজ-মেরুন বাহিনী।
দ্বিতীয়ার্ধে ফল দাঁড়াল ৩-১
দ্বিতীয়ার্ধে পঞ্জাব কিছুটা আক্রমণাত্মক হয়। ৫৩ মিনিটের মাথায় নিজেদের ভুলে গোল খায় বাগান। গোলরক্ষক বিশাল কাইথকে লক্ষ করে ব্যাক পাস করেন মার্টিন্স। পঞ্জাবের অধিনায়ক লুকা মায়সেন যে কাছেই আছেন তা তিনি দেখেননি। বিশাল বল ধরার আগেই মায়সেন টুক করে বলটি মোহনবাগানের জালে জড়িয়ে দেন।
শুভাশিস বসুর দিক থেকে বার বার আক্রমণ হচ্ছিল। তাতে কোচ ফেরান্দো শুভাশিসকে তুলে নিয়ে নামান মনবীর সিংহকে। এবং সঙ্গে সঙ্গে তার ফলও পেয়ে যান। ম্যাচের ৬৪ মিনিটের মাথায় গোল পেয়ে যান মনবীর। বাঁ প্রান্ত ধরে এগিয়ে পঞ্জাবের বক্সে তাঁকে ক্রস দেন পেত্রাতোস। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডান পায়ের টোকায় গোল করেন মনবীর। ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় সবুজ-মেরুন।
এর পরেও লিড আরও বাড়াতে মোহনবাগান চাপ সৃষ্টি করছিল। ৮৫ মিনিটের মাথায় গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি সাদিকু। এর পর শেষ ১১ মিনিট আক্রমণ প্রতি-আক্রমণের খেলা চলে। পঞ্জাব গোল শোধ করার আপ্রাণ চেষ্টা করে। কিন্তু বাগানের রক্ষণকে তারা ভাঙতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলে প্রথম ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ে মোহনবাগান।
আরও পড়ুন
কলকাতা লিগ: ডেভিডের ফের জোড়া গোল, ভবানীপুরকে হারিয়ে খেতাবের আরও কাছে মহমেডান