মার্কিন ডলারের বিপরীতে টানা চতুর্থ দিনে ১৩ পয়সা কমল ভারতীয় রুপি! সোমবার একটা সময় মার্কিন ডলারের বিপরীতে ৩৩.২৯-এ নেমে আসে রুপি। যা সর্বকালের সর্বনিম্ন। মূলত বিশ্ববাজারে ঝুঁকি বিমুখতা এবং অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধির কারণেই এই পতন বলে অনুমান বিশ্লেষকদের।
বলে রাখা ভালো, আন্তর্জাতিক বাজারে অন্যান্য মুদ্রার তুলনায় ডলারের শক্তি ক্রমশ বাড়ছে। যে কারণে, রুপির প্রতি বিনিয়োগকারীদের মনোভাব যথেষ্ট দুর্বল হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা (ফরেক্স) ব্যবসায়ীরা জানান, এর বাইরে দেশীয় শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব বিনিয়োগকারীদের মনোভাবকেও প্রভাবিত করেছে।
আন্তঃব্যাঙ্ক বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় বাজারে, রুপি এ দিন ৮৩.০৯-এ খুলেছিল। এ দিনের লেনদেনের একটা সময় যা ডলার প্রতি ৮৩.০৯ থেকে ৮৩.৩০-এর মধ্যে ছিল। তবে এটি শেষ পর্যন্ত ডলার প্রতি ৮৩.২৯-এ (অস্থায়ী) বন্ধ হয়। উল্লেখযোগ্য ভাবে, শুক্রবার বাজার বন্ধ হওয়ার সময়ে যে মূল্য ছিল, তার থেকে ১৩ পয়সা পতনের মুখ দেখেছে রুপি। যা সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গিয়েছে। শুক্রবার শেষ ট্রেডিং সেশনে, রুপি ১৩ পয়সা কমে ডলার প্রতি ৮৩.১৬-তে বন্ধ হয়েছিল।
বিশ্বের ছয়টি প্রধান মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন ডলারের অবস্থান প্রতিফলিত করে ডলার সূচক। পতন ধরা পড়েছে সেখানেও। এই সূচক ০.১১ শতাংশ কমে ১০৫.২০-তে ঠেকেছে। অন্য দিকে, বেঞ্চমার্ক ক্রুড হিসেবে বিবেচিত ব্রেন্ট ক্রুড ০.৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারেল প্রতি ৯৪.৩২ ডলারে পৌঁছেছে। ব্রেন্ট ক্রুডের বৃদ্ধি ডলারের মূল্যেও প্রভাব ফেলছে।
এইচডিএফসি সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক দিলীপ পারমারের মন্তব্য উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, এক দিকে বাজারের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানের ইঙ্গিত, অন্য দিকে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার জোরালো প্রভাব পড়েছে ভারতীয় রুপির দামে। নতুন একটি রেকর্ড (সর্বনিম্ন) পর্যায়ে পৌঁছছে, তবে দুর্বলতার প্রবণতা যে এখনও থামেনি, তেমনটাও অনুমান করা যেতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, ৮৩.৫০ থেকে ৮৩.৭০-র স্তরে পৌঁছাতে পারে ভারতীয় রুপি। যেখানে সাপোর্ট হতে পারে ৮৩। এর নেপথ্যে রয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কারণ। এগুলির মধ্যে যেমন রয়েছে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে যাওয়া, শক্তিশালী ডলার, তেমনই রয়েছে বৈদেশিক তহবিলের বহিঃপ্রবাহ এবং একটি বিস্তৃত বাণিজ্য ঘাটতি।
আরও পড়ুন: কেন সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হল? কী বলছে বিরোধীরা?