শিব হলেন বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি, অবস্থা এবং ধ্বংসের শাসক। মহাদেব কে ত্রিত্বের মধ্যে ধ্বংসের দেবতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। সমগ্র হিন্দু সমাজে শিব পুজো ব্যাপক ভাবে প্রচলিত। বর্তমানে ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এমনকি পাকিস্তানের কিছু অংশে শিব পুজোর ব্যাপক প্রচলন লক্ষ্য করা যায়।
শিবকে সাধারণত “শিবলিঙ্গ’’ নামক বিমুর্ত প্রতীকে পুজো করা হয়ে থাকে। তবে শিবমূর্তির প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল তার তৃতীয় নয়ন, গলায় বাসুকী নাগ, জটায় অর্ধচন্দ্র, জটার উপর থেকে প্রবাহিত গঙ্গা, অস্ত্র ত্রিশূল ও বাদ্য ডমরু। শিবের কিছু জনপ্রিয় নাম হল মহেশ্বর, ভোলানা্ নীলকন্ঠ, মহাদে্ রুদ্র এছাড়াও একাধিক নাম রয়েছে তার।
শিব- কল্যাণ স্বরূপ।
মহেশ্বর- মায়ার অধীশ্বর।
শংকর- সবার কল্যাণ করেন যিনি।
শ্রীকণ্ঠ- সুন্দর কণ্ঠ যাঁর
গঙ্গাধর- যিনি গঙ্গাকে ধারণ করেছেন।
কৈলাসবাসী- কৈলাসের নিবাসী।
জটাধর-জটা রেখেছেন যিনি।
মহাকাল-কালেরও কাল যিনি।
সর্বজ্ঞ- যিনি সব কিছু জানেন।
হবি- আহূতি রূপী দ্রব্যের মতো।
গণনাথ-গণদের স্বামী।
ভগবান- সর্বসমর্থ ঐশ্বর্য সম্পন্ন।
মৃত্যুঞ্জয়- মৃত্যুকে জয় করেছেন যিনি।
জগদ্গুরু- জগতের গুরু।
অষ্টমূর্তি-আটটি রূপ আছে যার।
দিগম্বর- নগ্ন, আকাশরূপী বস্ত্র ধারণকারী।
সাত্বিক- সত্ব গুণ যার।
দেব-স্বয়ং প্রকাশরূপ যিনি।
হরি-বিষ্ণুস্বরূপ।
মহাদেব- দেবতাদেরও দেবতা।
হর- পাপ ও তাপ হরণ করেন যিনি।
তারক- সবার তারণ করেন যিনি।
পরমেশ্বর- সর্বাধিক পরম ঈশ্বর।
গিরিধন্বা- মেরু পর্বতকে যিনি ধনুক বানিয়েছেন।
পুরারাতি- পুরদের বিনাশ করেছেন যিনি।
সদাশিব- নিত্য কল্যাণ রূপী।
সোম- উমা- সহ রূপ যার।
সোমসূর্যাগ্নিলোচন- চন্দ্র, সূর্য ও অগ্নিরূপী চোখ যার।
বৃষাঙ্ক- বৃষ চিহ্নের ধ্বজা রয়েছে যার।
মৃগপাণি- হাতে যিনি হরিণ ধারণ করেছেন।
উগ্র-অত্যন্ত উগ্র রূপ যার।
ভক্তবৎসল- ভক্তদের অত্যন্ত স্নেহ করেন যিনি।
শূলপাণি- হাতে ত্রিশূল যার।
শিপিবিষ্ট-সিতুহায়ে প্রবেশ করেন যিনি।
কামারী- কামদেবের শত্রু, অন্ধকারকে পরাজিত করেছেন যিনি।
ভীম-ভয়ঙ্কর রূপ যার।
বৃষভারূঢ়- বৃষের উপরে সওয়ার যিনি।
যজ্ঞময়-যজ্ঞস্বরূপ যিনি।
দুর্ধর্ষ- কারও চাপের কাছে নত হন না যিনি।
ভর্গ-পাপনাশক।
পঞ্চবক্ত্র- পঞ্চ মুখ যার।
অনঘ- পাপরহিত।
গিরিপ্রিয়- পর্বত প্রেমী।
প্রমথাধিপ- প্রমথগণের অধিপতি।
স্থাণু- স্পন্দন বিহিন কূটস্থ রূপ যার।
বিশ্বেশ্বর- সমগ্র বিশ্বের ঈশ্বর।
কঠোর- অত্যন্ত মজবুত দেহ যার।
কৃপানিধি- করুণার সাগর।
বিষ্ণুবল্লভ- বিষ্ণুর অতিপ্রিয়।
শশীশেখর- মস্তকে চাঁদকে ধারণ করেছেন যিনি।
কপর্দী- জটাধারণ করেছেন যিনি।
অম্বিকানাথ- দেবী দূর্গার স্বামী।
কপালী- কপাল ধারণ করেন যিনি।
ললাটাক্ষ- ললাটে চোখ যার।
স্বরময়ী- সাতটি স্বরে যার নিবাস
পরমাত্মা- সব আত্মায় সর্বোচ্চ।
বীরভদ্র- বীর হওয়া সত্ত্বেও শান্ত স্বরূপ যার।
কৃত্তিবাসা- গজচর্ম পরিধান করেছেন যিনি।
শুদ্ধবিগ্রহ- শুদ্ধমূর্তি যার।
অজ- জন্ম রহিত।
পূষদন্তভিৎ- পূষার দন্ত যিনি উপড়ে ফেলেছিলেন।
অপবর্গপ্রদ- কৈবল্য মোক্ষ দান করেন যিনি।
অনন্ত- দেশকালবস্তু রূপী পরিছেদ রহিত।
অব্যয়- খরচ হওয়া সত্ত্বেও ঘাটতি হয় না যার।
খন্ডপরশু- ভাঙা পরশু ধারণ করেছেন যিনি।
রুদ্র- ভয়ানক।
সূক্ষ্মতনু- সূক্ষ্ম শরীর যার।
প্রজাপতি- প্রজার পালনকর্তা।
গিরীশ্বর- কৈলাস পর্বতে শয়ন করেন যিনি।
কবচী- কবচ ধারণ করেছেন যিনি।
সুরসুদন- দৈত্য অন্ধককে যিনি বধ করেছেন।
ত্রিলোকেশ- তিন লোকের যিনি প্রভু।
বামদেব- অত্যন্ত সুন্দর স্বরূপ যার।
শম্ভু- আনন্দ স্বরূপ যার।
নীললোহিতন- নীল ও লাল বর্ণ যার।
খটবাঙ্গি- খাটিয়ায় একটি পা রাখেন যিনি।
পিনাকী- পিনাক অর্থাৎ ধনুক ধারণ করেছেন যিনি।
শিতিকণ্ঠ- সাদা কণ্ঠ যার।
ত্রিপুরান্তক- ত্রিপুরাসুরকে বধ করেছেন যিনি।
ত্রয়ীমূর্তি-বেদরূপী বিগ্রহ করেন যিনি।
হিরণ্যরেতা- স্বর্ণ তেজ যার।
মহাসেনজনক- কার্তিকেয়র পিতা।
ভূতপতি- ভূতপ্রেত বা পঞ্চভূতের অধিপতি।
অহির্বুধ্ন্য- কুণ্ডলিনী ধারণ করেছেন যিনি।
ভস্মোদ্ধুলিতবিগ্রহ- পুরো শরীরে ভস্ম লাগান যিনি।
অনীশ্বর- যিনি স্বয়ং সকলের প্রভু।
ভব- সংসার রূপে প্রকট হন যিনি।
শিবাপ্রিয়- পার্বতীর প্রিয়।
সামপ্রিয়- সামগানের প্রেমী।
অনেকাত্মা- অনেক রূপ ধারণ করতে পারেন যিনি।
পাশবিমোচন- বন্ধন থেকে মুক্ত করেন যিনি।
পশুপতি- পশুদের অধিপতি।
সহস্রপাদ- হাজার পদ বিশিষ্ট।
অব্যক্ত- ইন্দ্রিয়ের সামনে প্রকট হন না যিনি।
অব্যগ্র- কখনও ব্যথিত হন না যিনি।
সহস্রাক্ষ- হাজারটি চোখ যার।
মৃড-সুখস্বরূপ যার।
ব্যোমকেশ- আকাশের মতো চুল যার।
জগদ্ব্যাপী- জগতে ব্যাপ্ত বাস যার।
গিরীশ- পর্বতের স্বামী।
পরশুহস্ত- হাতে পরশু ধারণ করেছেন যিনি।
শর্ব- কষ্ট নষ্ট করেন যিনি।
বিরূপাক্ষ- বিচিত্র চোখ যাঁর (শিব ত্রিনেত্রের অধিকারী)।
ভুজঙ্গভূষণ- সাপের আভুষণ ধারণ করেন যিনি।
চারুবিক্রম- সুন্দর পরাক্রম যার।
শাশ্বত- নিত্য থাকেন যিনি।
ভগনেত্রভিদ- ভগ দেবতার চোখ নষ্ট করেছিলেন যিনি।
দক্ষাধ্বরহর- দক্ষের যজ্ঞ নষ্ট করেছিলেন যিনি।
মহা শিবরাত্রির সব পৌরাণিক কাহিনী জানতে দেখুন খবর অনলাইন।