বিয়ের সময় স্ত্রীর পাওয়া সোনা গয়না বা অন্য কোনও মূল্যবান সম্পত্তিতে স্বামীর কোনও অধিকার নেই। সমস্যায় পড়ে সেই সম্পত্তিতে হাত দিলেও পরে তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে দিতে হবে। এক মামলার প্রেক্ষিতে এমনই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ওই মামলায় স্ত্রীর ২৫ লক্ষ টাকা ফেরানোর জন্য স্বামীকে নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ।
মহিলার অভিযোগ, বিয়ের সময় তাঁকে প্রচুর সোনার গয়না দেন তাঁর বাবা। সেই সঙ্গে তাঁকে দু’লক্ষ টাকাও দিয়েছিলেন। কিন্তু বিয়ের প্রথম রাতের ওই সোনার গয়না ও অর্থ হাতিয়ে নেন স্বামী। সেই অর্থ গয়না তাঁর মাকে দিয়ে দেন।
মামলায় স্বামী আদালতে জানান, আগে থেকে তাঁর পরিবার বিপুল দেনায় ডুবে ছিল। সেই দেনা শোধ করতে সব অর্থ খরচ করতে হয়েছে।
আরও পড়ুন। প্রথম বাংলাদেশী মহিলা হিসাবে সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেলেন অভিনেত্রী বাঁধন
ওই বধূ আদালতের দ্বারস্থ হন। ২০১১ সালে পারিবারিক আদালত জানায়, মহিলার স্বামী ও শাশুড়ি যে ভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তা ঠিক নয়। আদালত অবিলম্বে সেই টাকা ফেরত দিতে বলে। কিন্তু স্বামী কেরল হাইকোর্টে নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করেন। হাইকোর্ট বলে, মহিলার গয়না ও অর্থের যে অপব্যবহার হয়েছে তা প্রমাণ হচ্ছে না। এরপর ওই বধূ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।
‘স্ত্রীধন’ (বিয়েতে স্ত্রী পাওয়া সম্পদ) কখনও যৌথ সম্পত্তি নয়। তা একেবারেই স্ত্রীর নিজস্ব সম্পত্তি। তাই স্বামী তাঁকে নিজের মতো ব্যবহার করতে পারে না। ব্যবহার করলেও তা ফিরিয়ে দিতে হবে স্ত্রীকে। এর পর ওই বধূকে ২৫ লক্ষ টাকা দিতে নির্দেশ দেন স্বামীকে।
কোন আইনে এই অধিকার
একজন হিন্দু মহিলার ‘স্ত্রীধনে’ অধিকার হিন্দু উত্তরাধিকার আইন, ১৯৫৬-এর ১৪ ধারা এবং হিন্দু বিবাহ আইন, ১৯৫৫-র ২৭ ধারার অধীনে আসে। আইন কোনও মহিলাকে বিয়ের আগে এবং বিয়ের সময় প্রাপ্ত উপহার এবং সম্পত্তির উপর অধিকার দেয়। গার্হস্থ্য হিংসা আইন ২০০৫-এর ২ ধারা নারীদের স্ত্রীধনের অধিকার দেয়। গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হলে এই আইনের সাহায্যে তারা তাদের অধিকার ফিরিয়ে নিতে পারে।