উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর : ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে সেবা করতে চান এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যের নবম স্থানাধিকারী বিতান আহমেদ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ডহারবার থানার ভোগপুঞ্জ গ্রামের ছেলে বিতান। বাবা আলতাফ আহমেদ স্কুলশিক্ষক এবং এপিডিআর নামে এক মানবাধিকার সংগঠনের রাজ্য সহ সম্পাদক, মা ওলিনা আখন্দও স্কুলশিক্ষক। বিতান ছোটোবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্র। তিনি সরিষা রামকৃষ্ণ মিশন শিক্ষামন্দির থেকে এ বছর পরীক্ষা দিয়েছিলেন উচ্চ মাধ্যমিক। আর বুধবার ফলাফল ঘোষণা হতে তিনি জানতে পারেন রাজ্যের মধ্যে নবম স্থানে রয়েছেন বিতান। আর এই খবর জানার পর থেকে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই গ্রামে খুশির উৎসব শুরু হয়ে গেছে।
বিতান ৪৮৮ নম্বর পেয়ে নবম হয়েছেন। তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে নম্বরগুলি হল- বাংলায়-৯৫, ইংরেজি -৯৮, বায়োলজি -৯২, কেমিস্ট্রি -৯৭, ফিজিক্স -৯৮ ও অঙ্ক -১০০। ফলাফল ঘোষণার পরে এ দিন বিতান বলেন, “আমাদের বাড়ি থেকে ২০-২৫ কিমি গেলে তবে কোনো অসুস্থ মানুষ চিকিৎসা করাতে পারে। তাই আমি চাই চিকিৎসক হতে। আমার বাবা-মা স্কুলশিক্ষক। তা ছাড়া আমার বাবা এপিডিআর সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থেকে মানুষের পাশে থেকে কাজ করে চলেছেন, তাই বাবার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমি চিকিৎসক হিসাবে মানুষের পাশে থাকতে চাই।”
আর ছেলের এই কাজে বাবা আলতাফ আহমেদ সব সময় আছেন বলে জানালেন। কলকাতা শহরতলি লাগোয়া এক গ্রামের বাসিন্দা বিতানের আগামী দিনের সাফল্য কামনা করে এলাকাবাসী।
উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল
বুধবার দুপুর ১টায় সাংবাদিক সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক ভাবে ফল ঘোষণা করেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। পর্ষদ সভাপতি জানান, এবার পাশ করেছে ৬ লক্ষ ৭৯ হাজার ৭৮৪ জন। পরীক্ষা দিয়েছিলেন ৭ লক্ষ ৬৪ হাজার ৪৪৮ জন। পাশের হার ৯০ শতাংশ। মেয়েদের পাশের হার বেশি। অসম্পূর্ণ ফল রয়েছে ৪ জনের। জেলা অনুযায়ী পাশের হারে প্রথম পূর্ব মেদিনীপুর। ৯৫.৭৭ শতাংশ পাশের হার, তার পর দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, কালিম্পং, কলকাতা, তার পর উত্তর ২৪ পরগনা।
পাশের হারে এগিয়ে মেয়েরা। প্রথম দশে ৫৮ জন রয়েছেন। তার মধ্যে সব থেকে বেশি রয়েছেন হুগলি থেকে, ১৩ জন। এর পর বাঁকুড়া রয়েছে। ১০ জন মেধাতালিকায় জায়গা পেয়েছেন। প্রথম হয়েছেন আলিপুরদুয়ারের ম্যাকউইলিয়াম হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের ছাত্র অভীক দাস। পেয়েছেন ৪৯৬। দ্বিতীয় হয়েছেন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র সৌম্যদীপ সাহা। প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৫। তৃতীয় হয়েছেন মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের পড়ুয়া অভিষেক গুপ্ত। প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৪।