ভারত: ২২২-৩ (ঋতুরাজ গায়কোয়াড় ১২৩ নট আউট, সূর্যকুমার যাদব ৩৯, বেহরেনডর্ফ ১-১২)
অস্ট্রেলিয়া: ২২৫-৫ (গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ১০৪ নট আউট, ট্র্যাভিস হেড ৩৫, রবি বিশনয় ২-৩২)
গুয়াহাটি: জয়ের জন্য শেষ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল ২১ রান। ক্রিজে রয়েছেন ম্যাথু ওয়েড এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। বল করবেন প্রসিধ কৃষ্ণ। যেখানে ১৯ ওভারে হয়েছে ২০২ রান, অর্থাৎ গড়ে প্রতি ওভারে ১০.৬ রান, সেখানে শেষ ওভারে ২১ রান? জয় সম্পর্কে কিছুটা নিশ্চিন্তই ছিল ভারতের সমর্থকরা। কিন্তু ক্রিজে যে রয়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, যাঁর ব্যাটিং বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে জয় এনে দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে শেষ চারে পৌঁছে দিয়েছিল এবং সেখান থেকে বিশ্বকাপ জয়।
প্রসিধ কৃষ্ণের প্রথম বল। ডিপ ফাইন লেগ দিয়ে সীমানার বাইরে পাঠিয়ে দিলেন ম্যাথু ওয়েড। পরের বলে ১ রান নিয়ে স্ট্রাইক দিয়ে দিলেন ম্যাক্সওয়েলকে। হাতে ৪টি বল, জয়ের জন্য করতে হবে ১৬ রান। প্রসিধের তৃতীয় বলে ছয় এবং বাকি ৩টি বলে ৩টি চার মেরে জয় এনে দিলেন ম্যাক্সওয়েল। অস্ট্রেলিয়া ৫ উইকেটে ২২৫ রান করে জিতে গেল ৫ উইকেটে। ৪৮ বলে ১০৪ রান করে নট আউট থেকে ‘প্লেয়ার অভ দ্য ম্যাচ’-এর পুরষ্কার তুলে নিলেন ম্যাক্সওয়েল।
ঋতুরাজের সেঞ্চুরি
মঙ্গলবার গুয়াহাটির বর্সাপাড়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। দলের ২৪ রানের মধ্যেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান যশস্বী জয়সোয়াল এবং ঈশান কিষান। পরিস্থিতি সামাল দেন ঋতুরাজ গায়কোয়াড় এবং দলের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। ২৪ রানের মধ্যে ২ উইকেট পড়ে গেলেও রান ওঠার গতি বেশ দ্রুতই ছিল। তবে ঋতুরাজ আর সূর্যকুমার জুটি বাঁধার পর ঝড়ের গতিতে রান উঠতে থাকে। দু’জনের মধ্যে সূর্যকুমার অবশ্য অনেক বেশি মারমুখী ছিলেন।
তৃতীয় উইকেটের জুটিতে ৫৭ রান ওঠার পর আউট হয়ে ফিরে যান সূর্যকুমার। ৫৭ রানের মধ্যে ৩৯ রানই ছিল সূর্যকুমারের। এর পর ঋতুরাজের সঙ্গী হন তিলক বর্মা। এ বার ঝড়ের গতিতে রান তুলতে থাকেন ঋতুরাজ। নিজের সেঞ্চুরিও করে ফেলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ভারতের রান ওঠে ৩ উইকেটে ২২২। অর্থাৎ চতুর্থ উইকেটের জুটিতে দুই ব্যাটার অবিচ্ছেদ্য ভাবে যোগ করেন ১৪১ রান। এর মধ্যে তিলকের অবদান ছিল ২৪ বলে ৩১ রান। ১৪১ রানের মধ্যে তিলকের রান ৩১। তা হলে বোঝাই যাচ্ছে কতটা মারমুখী ছিলেন ঋতুরাজ। তিনি ৫৭ বলে ১২৩ রান করে নট আউট থাকেন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৩টি উইকেট দখল করেন জ্যাসন বেহরেনডর্ফ, কেন রিচার্ডসন এবং আরোন হার্ডি।
ভারত এগিয়ে থাকল ২-১ ফলে
জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় লক্ষ্যমাত্রা ২২৩ রান তাড়া করতে গিয়ে ১৩৪ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। একে একে আউট হয়ে যান আরোন হার্ডি (১২ বলে ১৬ রান), ট্র্যাভিস হেড (১৮ বলে ৩৫), জোশ ইংলিস (৬ বলে ১০ রান), মার্কাস স্টয়নিস (২১ বলে ১৭ রান) এবং টিম ডেভিড (১ বলে ০ রান)। ১৩.৩ ওভারে ১৩৪ রান করে অস্ট্রেলিয়া। ভারতের হয়ে উইকেটগুলি ভাগ করে নেন রবি বিশনয় (২-৩২), অবেশ খান (১-৩৭), অক্ষর পটেল (১-৩৭) এবং অর্শদীপ সিং (১-৪৪)।
তখনও জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল ৮৭ রান। হাতে ছিল ৩৯টা বল। ম্যাথু ওয়েডকে নিয়ে শুরু হল গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের খেলা। সেই খেলায় সফল হলেন তিনি। ভারতের কোনো বোলারই বিচলিত করতে পারেননি ম্যাক্সওয়েলকে। শেষ পর্যন্ত ওয়েড ও ম্যাক্সওয়েল অবিচ্ছেদ্য থেকে জয়ের পথে ফেরালেন অস্ট্রেলিয়াকে। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে আপাতত ভারত এগিয়ে থাকল ২-১ ফলে।
আরও পড়ুন
টি২০ সিরিজ: যশস্বী, ঈশান, ঋতুরাজ, রিঙ্কুর ব্যাটিং এবং বিশনয় ও প্রসিধের বোলিং-এর দৌলতে ভারত ২-০
টি২০ সিরিজ: রুদ্ধশ্বাস শেষ ওভার, শেষ বলে রিঙ্কু জয় এনে দিলেন ভারতের