সানরাইজার্স হায়দরাবাদ: ১৭৫-৯ (হাইনরিখ ক্লাসেন ৫০, রাহুল ত্রিপাঠী ৩৭, অবেশ খান ৩-২৭, ট্রেন্ট বোল্ট ৩-৪৫)
রাজস্থান রয়্যালস্: ১৩৯-৭ (ধ্রুব জুরেল ৫৬ নট আউট, যশস্বী জয়সোয়াল ৪২, শাহবাজ আহমেদ ৩-২৩, অভিষেক শর্মা ২-২৪)
চেন্নাই: এবারের আইপিএল-এ লিগে যে দুটো দল প্রথম দুটো স্থানে ছিল শেষ পর্যন্ত তারাই খেলবে ফাইনালে। কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) আগেই ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল হায়দরাবাদকে হারিয়ে। সেই হায়দরাবাদই ফের তাদের মুখোমুখি হল। শুক্রবার ‘কোয়ালিফায়ার ২’ ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালস্কে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (এসআরএইচ)। আগামী রবিবার ২৬ মে চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে কলকাতা ও হায়দরাবাদ।
শুক্রবার চেন্নাইয়ে আয়োজিত মায়চে প্রথমে ব্যাট করে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ করে ৯ উইকেটে ১৭৫। জয়ের জন্য ১৭৬-এর লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে ৭.৪ ওভারে ১ উইকেটে ৬৫-তে পৌঁছে যায় রাজস্থান রয়্যালস্। তখন মনে হয়েছিল বাকি ১২.২ ওভারে ১১১ রান করা কষ্টকর হবে না রাজস্থানের, হাতে যখন রয়েছে ৯ উইকেট। কিন্তু এর পরেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে তারা। মাত্র ৫৯ রানের মধ্যে পড়ে যায় ৬ উইকেট।
১৭.৪ ওভারে ১২৪ রানে পৌঁছোয় রাজস্থান। তখনও জয় ৫২ রান দূরে, হাতে মাত্র ১৪টা বল। অর্থাৎ ওভারপিছু গড়ে ২৪ রান করতে হবে। তখন বোঝা গিয়েছিল রাজস্থানের জয় দুর অস্ত। শেষ পর্যন্ত ১৩৯ রানে গুটিয়ে যায় তারা। হায়দরাবাদ জিতে যায় ৩৬ রানে। ২৩ রানে ৩ উইকেট দখল করে ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হন শাহবাজ আহমেদ। হায়দরাবাদের শাহবাজ ব্যাটিং-এ ১৮ রান করেন।
রান এল ক্লাসেন, ত্রিপাঠী, হেডের ব্যাট থেকে
এ দিন রাজস্থান রয়্যালস্ই টসে জিতেছিল। তারা ব্যাট করতে পাঠায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে। প্রথম ব্যাট করার সুযোগ ভালো করে কাজে লাগাতে পারেনি হায়দরাবাদ। তারা নির্দিষ্ট ২০ ওভারে ১৭৫ রান করে। রাজস্থান রয়্যালস্-এর বোলাররা নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট দখল করেছেন। ওপেনিং ব্যাটার অভিষেক শর্মা দ্রুত প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেও কিছুটা খেলা দেখান আর-এক ওপেনিং ব্যাটার ট্র্যাভিস হেড। দ্বিতীয় উইকেটে হেডের সঙ্গী হন রাহুল ত্রিপাঠী। তিনি আসতে খেলার মোড় কিছুটা ঘোরে। বেশ মারমুখী ছিলেন রাহুল। মাত্র ১৫ বলে ৩৭ রান করে তিনি আউট হন। দলের স্কোর তখন ৫৫ রান। মাত্র ২ রান যোগ হতেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান আউডেন মার্করাম।
এর পর পতন কিছুটা ঠেকান ট্র্যাভিস হেড এবং হাইনরিখ ক্লাসেন। ২৮ বলে ৩৪ রান করে দলের ৯৯ রানে হেড আউট হতেই ফের দ্রুত উইকেট পড়তে থাকে। ফের সপ্তম উইকেটে ৪৩ রান যোগ করে ক্লাসেন ও শাহবাজ আহমেদের জুটি। ৩৪ বলে ৫০ রান করে দলের ১৬৩ রানে ক্লাসেন আউট হতেই ফের ধস নামে। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭৫ করে থেমে যায় হায়দরাবাদ। রাজস্থানের দুই সিমার অবেশ খান (২৭ রানে ৩ উইকেট) এবং ট্রেন্ট বোল্ট (৪৫ রানে ৩ উইকেট) বেশ ভালো বল করেন।
রাজস্থান রয়্যালস্-এর আত্মসমর্পণ
এবারের আইপিএল-এ যা প্রবণতা তাতে ১৭৬-কে খুব কঠিন লক্ষ্যমাত্রা বলা যায় না। ওপেনিং-ও খুব খারাপ হয়নি। দলের ২৪ রানে ওপেনার টম কোহলার ক্যাডমোর আউট হতে যশস্বী জয়সোয়ালের সঙ্গী হন অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। সঞ্জু নিজেকে কিছুটা গুটিয়ে রাখলেও যশস্বীর ব্যাট থেকে রানের বান ডাকে। ঠিক ২০০ স্ট্রাইক রেটে ২১ বলে ৪২ রান করেন যশস্বী। দলের ৬৫ রানে তিনি শাহবাজ আহমেদের বলে আবদুল সামাদকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান।
এই পরিস্থিতিতেও রাজস্থানের আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু ছিল না। জয়ের জন্য আর ১১১ রান তোলা বাকি ছিল। হাতে ৮ উইকেট এবং ১২.১ ওভার। অর্থাৎ ওভারপিছু গড়ে ৯-এর মতো রান তুললেই জয় করায়ত্ত করা যায়।
কিন্তু একমাত্র ধ্রুব জুরেল ছাড়া রাজস্থানের আর কোনো ব্যাটার হায়দরাবাদের শাহবাজ আহমেদ (২৩ রানে ৩ উইকেট) আর অভিষেক শর্মার (২৪ রানে ২ উইকেট) বলের মোকাবিলা করতে পারল না। দলের ১৩৯ রানের মধ্যে যশস্বীর অবদান ৪২ এবং ধ্রুব জুরেলের ৫৬ (৩৫ বলে)। অর্থাৎ দু’জনে করেন ৯৮ রান। বাকি ৭ জন ব্যাটার করেন ৪১ রান। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে কী ভাবে হায়দরাবাদের সাধারণ স্কোরের কাছে আত্মসমর্পণ করল রাজস্থান।
আরও পড়ুন
আইপিএল ২০২৪: বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে হায়দরাবাদের মুখোমুখি রাজস্থান রয়্যালস্