জন্মাষ্টমী তিথিতেই জন্ম হয়েছিল লোকনাথ ব্রহ্মচারীর, ভক্তদের কাছে তিনি বাবা লোকনাথ নামেই তিনি পরিচিত। তাঁর বিখ্যাত বাণী ‘রণে বনে জলে জঙ্গলে যখনই বিপদে পড়িবে, আমাকে স্মরণ করিও, আমিই রক্ষা করিব।‘ ১৮৯০ সালের ৩ জুন মৃত্যু হয়েছিল তাঁর, এই দিনই লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তিরোধান দিবস।
লোকনাথ ব্রহ্মচারী ছিলেন একজন হিন্দু সিদ্ধপুরুষ। তিনি বাবা লোকনাথ নামেও পরিচিত। হিন্দুধর্মানুসারীদের নিকট লোকনাথ ব্রহ্মচারী অত্যন্ত পূজনীয় ব্যক্তিত্ব।
লোকনাথ ব্রহ্মচারী ১১৩৭ বঙ্গাব্দ বা ইংরেজি ১৭৩০ খ্রিস্টাব্দে তত্কালীন যশোহর জেলা আর বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার বারাসাত মহকুমার চৌরশী চাকলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
তাঁর বাবার নাম রামনারায়ণ ও মায়ের নাম কমলা দেবী। বাবা ছিলেন ধার্মিক ব্রাহ্মণ। পিতা-মাতার চতুর্থ সন্তান ছিলেন তিনি। লোকনাথকে সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহণ করানোর জন্য ১১ বছরে উপনয়ন দিয়ে পাশের গ্রামের ভগবান গাঙ্গুলীর হাতে তুলে দেন। এই সময় তাঁর সঙ্গী হন বাল্যবন্ধু বেনীমাধব।
লোকনাথ বাবার অলৌকিক মাহাত্ম্য নিয়ে কাহিনির শেষ নেই।
তিনি নাকি ছিলেন স্বয়ং শিব। অসংখ্য মানুষের নানা অভীষ্ট তিনি পূরণ করেছেন বলে কথিত আছে। কেউ মোকদ্দমায় বিপদে পড়েছেন। অথবা কেউ রোগে ভুগছেন। সব শ্রেণির মানুষের কাছে তিনিই ছিলেন ভরসা। তাঁরা বাংলাদেশের সোনারগাঁওয়ের বারদীতে বাবার আশ্রমে আসতেন। ফিরে যেতেন ভয়হীন ভাবে।
লোকনাথ বাবা ভক্তদের শিখিয়েছিলেন, প্রতিদিন রাতে শুতে যাবার সময় সারাদিনের কাজের হিসেব-নিকেশ করতে। মানে, ডায়েরি মেনটেন করতে। সেইখান থেকে যেসব জিনিস খারাপ বিবেচিত হবে, সেইদিকে খেয়াল রাখতে। যাতে, সেইসব কাজ আর ফের না-হয়। ভক্তদের একাংশের মতে, তিনি ১৫০ বছরেরও বেশি বেঁচেছিলেন।
আরও পডুন: লোকনাথ বাবার পুজোয় কী কী উপকরণ লাগে? জেনে নিন
এক ব্যক্তি ছেলের যক্ষ্মা সারানোর জন্য তাঁর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই ছেলের যক্ষ্মা লোকনাথ বাবা নিজের শরীরে ধারণ করেছিলেন। সেই ছেলেটির যক্ষ্মা সেরে গেলেও, লোকনাথ বাবার শরীরে যক্ষ্মা ছড়িয়ে পড়ে। কবে তিনি দেহত্যাগ করবেন, সেই কথাও আগে থেকেই ভক্তদের জানিয়ে দিয়েছিলেন লোকনাথ বাবা।
তিনি দেহত্যাগের পূর্বপর্যন্ত বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের বারদী আশ্রমে অবস্থান করেছিলেন। বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার বারদীতে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু তীর্থভূমি।