রাম নবমী: ধর্মের প্রতিষ্ঠা ও মন্দ শক্তির বিনাশের উৎসব
রাম নবমী হিন্দুদের অন্যতম পবিত্র উৎসব, যা ভগবান রামের জন্মতিথি হিসেবে পালিত হয়। ভগবান রাম হলেন ভগবান বিষ্ণুর সপ্তম অবতার। এই উৎসবটি প্রতিবছর চৈত্র মাসের নবম দিনে পালিত হয়, যা সাধারণত মার্চ বা এপ্রিল মাসের মধ্যে পড়ে।
রাম নবমীর পবিত্রতা ও তাৎপর্য
ত্রেতা যুগে ভগবান বিষ্ণু রাম অবতার রূপে অবতীর্ণ হন। তখন অযোধ্যার মহারাজ দশরথ ও রাণী কৌশল্যার ঘরে পুত্র রাম জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্ম শুধু হিন্দু ধর্মগ্রন্থেই নয়, জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থেও বর্ণিত হয়েছে। ভগবান রামকে ন্যায়পরায়ণতা ও সত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
রাম নবমীর মূল উদ্দেশ্য হল মন্দ শক্তির বিনাশ করে শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠা করা। এই দিনে মন্দের উপর ভালোর জয়গান করে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভগবান রামের জীবনী এবং তাঁর ন্যায়নিষ্ঠ জীবনধারা মানুষের মধ্যে আদর্শের বীজ বপন করে।
রাম নবমীর আচার-অনুষ্ঠান
রাম নবমীর দিনে সূর্য দেবকে জল প্রদান করে দিনের সূচনা করা হয়। সূর্য দেবকে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে পূজা করা হয়। তারপর ভক্তরা বৈদিক মন্ত্র পাঠ করেন এবং ভগবান রামের জীবনী পাঠ করে শোনান। গীতাপাঠ, রামায়ণের কাহিনী পাঠ এবং ভক্তিমূলক গান পরিবেশন করা হয়। অনেক ভক্ত মন্দিরে গিয়ে পুজো করেন এবং বাড়িতে রামের মূর্তিতে পুজো করেন।
অনেক স্থানে রাম নবমী উপলক্ষে বিশেষ যাত্রাপালা ও রামলীলার আয়োজন করা হয়। ভগবান রামের জীবন থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে ভক্তরা সততার পথে চলার অঙ্গীকার করেন।
রাম নবমীর সামাজিক গুরুত্ব
রাম নবমীর মাধ্যমে আমরা শিক্ষা পাই যে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সমাজে মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্যের জয় নিশ্চিত করতে হবে। এই পবিত্র দিনে ভক্তরা ব্রত পালন করেন এবং বিশেষ খাদ্য প্রস্তুত করে প্রসাদ বিতরণ করেন।
শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠা
রাম নবমী আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, মন্দ শক্তিকে পরাজিত করে শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠা করা মানবজীবনের প্রধান উদ্দেশ্য। ভগবান রামের জীবন আমাদের সাহস, ন্যায় এবং সত্যের পথ দেখায়। এই দিনটি উদযাপনের মাধ্যমে আমরা নৈতিক মূল্যবোধের চর্চা করি এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের বীজ বপন করি।
খবরের সব আপডেট পেতে পড়ুন খবর অনলাইন।